রাশিয়ান গ্যাসের দাম রুবলে (রুশ মুদ্রা) পরিশোধ করতে হবে, মস্কোর এমন দাবি মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে ইউরোপ যে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে তা এখন আরও স্পষ্ট।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ‘বন্ধুসুলভ নয়’-এমন দেশগুলোকে রুবল দিয়েই রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস কিনতে হবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাশিয়ান মুদ্রার মান বাড়ানোর লক্ষ্যেই পুতিন এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকতে পারেন। কারণ, এ বছর ২০ শতাংশের বেশি মূল্য হারিয়েছে রুবল।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ সম্মেলনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেন, এ সংক্রান্ত যত চুক্তি রয়েছে তার সবই স্পষ্ট। এটা (রুবলে গ্যাসের দাম পরিশোধ) অবৈধ। যেসব ইউরোপীয় সংস্থা রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস কেনে এবং যারা ইউরোপীয় ভূখণ্ডে কাজ করে, তাদের ইউরোতেই লেনদেন করতে হবে। তাই মস্কো এখন যা দাবি করছে তা পূরণ করা সম্ভব নয়। এ ধরনের কোনো চুক্তি নেই।
ইউক্রেন সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার ওপর নানা ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে আগে থেকেই কিছুটা নড়বড়ে অর্থনীতির এই দেশটি। ডলারের বিপরীতে কমে গেছে রুবলের দর।
সংকট কাটাতে যুদ্ধাবস্থায় অন্যান্য দেশগুলোর আচরণের ওপরে ভিত্তি করে সম্প্রতি ‘বন্ধুসুলভ নয়’ এমন দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউভুক্ত অধিকাংশ দেশের নাম রয়েছে তালিকাটিতে। ফলে এসব দেশ রাশিয়া থেকে গ্যাস কিনলে, দাম পরিশোধ করতে হবে রুবল দিয়ে।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের হিসাব অনুযায়ী, ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়া থেকে যে তেল ও গ্যাস কিনেছে, তার দামের ৫৮ শতাংশ শোধ করেছে ইউরো দিয়ে। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৯ শতাংশ অর্থ দেওয়া হয়েছে ডলারে। এদিকে যুদ্ধাবস্থায় দাম পড়ে গেলেও রাশিয়ার এই নতুন ঘোষণায় আবারও উঠতে শুরু করেছে রুবলের দাম।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।